Monday, November 02, 2009

পরীক্ষা

নিজের লেখা প্রথম ছাপার অক্ষরে দেখেছিলাম তৃতীয় শ্রেণীতে যখন পড়ি। কলেজের বার্ষিকীতে একটা ছড়া লিখেছিলাম পরীক্ষা নিয়ে। কথাগুলো ঠিকঠাক মনে করতে বেশ কষ্ট হল। একসময় হয়তো ভুলেই যাব। তাই তুলে রাখছি। অত ছোটবেলাতে আমি কিন্তু বেশ শান্ত-শিষ্ট সুবোধ বালক ছিলাম। পড়াশোনায় মোটেই ফাঁকিবাজ ছিলাম না। তখন মাথা থেকে এরকম ছড়া বের হলো কেন কে জানে! হয়তো তখন ভবিষ্যত দেখে ফেলেছিলাম দৈববশে।

পরীক্ষা
সামনে পরীক্ষা, কি যে করি,
তাই নিয়ে আমি চিন্তায় মরি।
বই খাতা খুলে দেখি মেলা পড়া বাকি,
ভাবি কেন দিয়েছিলাম এতো ফাঁকি!
অবস্থা দেখে আব্বু বোঝান আমায়,
চিন্তায় আমার সর্ব শরীর ঘামায়।

Saturday, October 31, 2009

আয়না

মধ্যরাতে আয়নায় তাকিয়ে তোমার কখনও কি মনে হয়েছে যে সামনের মানুষটা তুমি নও? হঠাৎ চমকে উঠে দেখেছো কেউ একজন নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তোমাকে? তোমার শিরদাঁড়া বেয়ে বয়ে গেছে একটা ভয়ের স্রোত? আয়নায় নিজেকে দেখে আজকে এরকম ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম পাচ্ছিলো তাই চোখেমুখে পানির ঝাপ্টা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ নিজেকে আয়নাই দেখে প্রথমে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। তারপর আতঙ্কিত হলাম। আয়নাটা খুব স্পষ্ট হয়ে গেল যেন। আর মনে হল ওপাশে একটা পরিষ্কার জগৎ। আমার সামনে একটা রক্তমাংসের মানুষ। চোখে গভীর কৌতুহল আর কৌতুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। ভয়, কৌতুক আবার আতঙ্কের একটা মিশ্র অনুভূতিতে মাথার ভেতরটা কেমন একটা ফুটো গ্যাস বেলুনের মতো হয়ে গেল। অদ্ভুত সময় এই মাঝরাত।

Wednesday, October 28, 2009

বিদায় জিওসিটিজ

জিওসিটিজ বন্ধ হয়ে গেছে এই ২৬ অক্টোবর। আর কারও কোনো অনুভূতি হয়েছে কিনা জানি না আমার কিছুটা কষ্টের অনুভূতি হয়েছে। অনেকদিন ধরেই শুনতে পাচ্ছিলাম বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু আজকে ঢুকে যখন দেখলাম সত্যিই বন্ধ হয়ে গেছে তখন ছোট্ট একটা ধাক্কা খেয়েছি। অনেক অনেক স্মৃতি ছিল এই জিওসিটিজকে জড়িয়ে। এই জিওসিটিজেই প্রথম একটা ঠিকানা খুলেছিলাম নিজের। কত কী রেখেছিলাম সেখানে। শুরুতেই লিখেছিলাম আমার ছোট্ট ভুবনে স্বাগতম। বন্ধুদের দেখিয়ে কত ছেলেমানুষি ভাব যে নিতাম একটা সময়। আর একটা মেয়ে, যাকে অগুন্তি মেইল করেছি জীবনে তাকে সেই প্রথম যে মেইলটা করেছিলাম তাতে লিখেছিলাম -

My site: www.geocities.com/syeedibn.

Wednesday, July 22, 2009

এম্নে হইলে কেম্নে হইবে

বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপদে মোরে পড়তে না যেন হয়...

Tuesday, May 26, 2009

বল বিভ্রাট

ইদানীং আমি খুব টেবিল টেনিস খেলছি। শুধু আমি না, আমার চারপাশে অনেকেই খেলছে। ঘটনা হচ্ছে আমাদের ডিপার্টমেন্টে ইনডোর গেমস টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে শিগগিরি। তাই ঝালিয়ে নেয়া আর কি, যদিও লাউ শেষমেষ কদুই। চারপাশে টিটি খেলার এই মহড়া দেখে আমার একটা ঘটনা মনে পরে গেল। ফাঁকতালে সেটাই লিখে রাখি এখানে। ঘটনা বেশি আগের না। বছরখানিক আগের হবে। তখন টিটি বল কিনতে যেতে হতো মেডিকেলে। ওখানে একটা দোকান ছিল যেখানে বেশ চড়া দামে ওগুলো বিক্রী হতো। এখন অবশ্য অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের ভেতর আলাউদ্দিন ভাইয়ের কাছে থেকে এখন বল কেনা যায়। যাই হোক এখনকার স্বর্নযুগ না তখনকার কাদামাটির যুগের ঘটনা এটা। একদিন আমি সিড়ি দিয়ে নামবো বলে এগুচ্ছি হন্তদন্ত হয়ে। হঠাৎ টিটি বোর্ডের কাছ থেকে একটা জুনিয়র ছেলে আমার দিকে ছুটে এলো। আমি অবশ্য গতি কমাইনি। সিড়ি দিয়ে কয়েক কদম নেমেও গিয়েছি। ছেলেটা, সম্ভবত ডিপার্টমেন্টে একদম নতুন, বেশ ব্যগ্র হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ভাইয়া বল ফেটে গেছে, কি করবো...। আমার তাড়া ছিল তাই তাত্তাড়ি জবাব দিলাম, মেডিকেলে যাও! 

Thursday, May 14, 2009

...

বিক্ষিপ্ত এবং অর্থহীন ভাবনায় আমি জীবনের সিকিভাগের কিছু কম ব্যয় করেছি বলে মনে করি। কাজেই এগুলো আমার ব্লগে তাদের উপস্থিতি  দাবী করেতেই পারে।

 

খুব রোদে আমার মাথায় জলীয় অংশগুলো বাষ্প হয়ে যায়। তখন আমার মাথার ভেতর মগজটা নাড়াচাড়া করে।

 

বাতাসে আমার ঘরের দরজা নড়ছে। এটাকে আমি ভূতের কারবার বলে চালাতে পারি এবং আগামীকাল থেকে ভূত দেখিনি কিন্তু ভূতের  ন্যাজ দেখেছি টাইপের গল্প ফেঁদে বসতে পারি।

 

এখন আমার পড়ার কথা। পড়ছিনা সম্ভবত এই কারণে যে আমি জিনিসগুলো বুঝে উঠতে পারবো এই ব্যাপারে খুব আত্মবিশ্বাসী নই।

 

বুদবুদ্গুলো অল্পতেই ফেটে যায় সম্ভবত এই কারণে যে সাবানটা খুব সস্তা মানের।

 

একদিন একজন লেখকের সাক্ষাতকার পড়লাম পত্রিকায়। জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন জীবন আসলে অর্থহীন, আমরা সেই অর্থহীন জীবনে নানা অর্থ আরোপের চেষ্টা করে যাই নিরন্তর। কথাটা আমার মাথার ভেতর ঢুকে গেল। তারপর সেই ভাবনাটা সহস্রদিকে ছুটে গেল।

 

আমার ছোটবেলায় আমি ছোটই ছিলাম। 

Wednesday, April 29, 2009

আজকের দিনটায় কি হবে বলে দিই

আজকের দিনটায় কি হবে আমি বলে দিই। আজ কোন হাতি ঘোড়া মরবে না ঢাকার রাস্তায়। আজকেও সূর্যের লজ্জা ঘুচবে না। ঢাকার রাস্তায় আজকেও জ্যাম ফেলে মন্ত্রীদের গাড়ি চবে পি্পপিপ হর্ন বাজিয়ে। আজকে তোমার সাথে আমার দেখা হবে না। আজকে আমার ঘুব ঘুমাতে ইচ্ছা হবে অসময়ে। আজকে আমার ইচ্ছে করবে খুব আমার কাজগুলো অন্য কেউ করে দিক। আজকের দিনটা বড়ই আজকের মত থাকবে। আজ আমি ছাতা খুলতে ভুলে যাব। আজ আমি বাস স্টপে গিয়ে তাড়াতাড়ি বাস পেয়ে যাব। আমার বাস আজকেও জ্যামে আটকা পড়ে থাকবে ্ধানমন্ডিতে। না আজকের দিনটায় আমি একটু বদলাবো না কি গতকালের থেকে? আমার তো একটু বদল দরকার ছিল। আর আমার বয়সটাও একদিন বাড়বে ৈকি আজকের দিনটার পরে।

Tuesday, April 21, 2009

ইচ্ছে হলো তাই...

ছেলেমানুষী শখ আমার কখনও যাবে না। কারও ছেলেমানুষী কোন শখের কথা শুনলে আমার খুব ইচ্ছে করে তার শখটা পূরণ করে দিতে। হয়তো এজন্য যে আমার ভেতর বরাবর একটা ছেলেমানুষ বাস করে। ছেলেবেলায় যত শখ ছিল সেগুলো বেশিরভাগই আজো আমি চাইলেই মনে করতে পারি। আর আমার সবচেয়ে ছোট ভাইটি এখন যে বয়সে সেই বয়সেই আমি সব কল্পনার ফানুস উড়াতাম দুহাত ভরে, তাই ওকে দেখে আমি আমাকে আঁকি। তারওপর আমার স্বপ্নগুলোরই রঙ চড়াই তার ওপর। হয়তো অন্য হাতে সব ফানুস ওড়ে না, আবার কোনটা ওড়ে, আমি তাকিয়ে থাকি, লুকিয়ে দেখি। তারপর আমার মুখে জীবনানন্দের হাসি ফোঁটে।

Thursday, April 16, 2009

কী লাভ ?

পাঁচ ফুট উচ্চতা নিয়ে মানুষ কত শত ফুট উচ্চতার বাড়ি গড়ছে।ইটের পর ইট দিয়ে কি বিশাল একেকটা ভবন সে বানাচ্ছে। এই অসাধ্য কাজ সে আজ কি অনায়াসে সম্ভব করে ফেলতে পারছে। কোত্থেকে শুরু করে আজ সে কত প্রযুক্তিই না আয়ত্ত্ব করেছে। আমি যে বাসে করে এই মুহুর্তে ভীষণ বেগে ছুটে চলেছি সেটাও চিন্তা করে দেখলে কি অসম্ভব একটা ব্যাপার! কিন্তু জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছুটন্ত সবকিছুর ভেতর যখন রাস্তার পাশে ছিন্নমূল মানুষগুলোর দিকে দৃষ্টি গেল মনে এল অট্টালিকা না হোক যেনতেন একটা ছাদের নীচে এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়া কি তুলনায় নিতান্তই একটা অনায়াস কাজ ছিল না? কী লাভ হল তাহলে?

Wednesday, April 15, 2009

একদিন আমার ঘরে একটা জোনাকী পোকা ঢুকেছিল

তখন আমরা একটা কলোনীতে থাকতাম। সেই কলোনীটা ভর্তি ছিল অনেক গাছপালাতে, সেখানে রাতে ঝিঁঝিঁ পোকাও ডাকতো, ঠিক গ্রামের মত। তবে জোনাকী পোকা সেখানে কখনও দেখিনি। তাই ঘরে জোনাকী পোকা ঢুকে যাওয়াটা ঠিক দৈনন্দিন ঘটনা ছিলনা। কেবল একবারই আমার ঘরে একটা জোনাকী পোকা ঢুকেছিল। যখন সেটা আমার ঘরে ঢুকেছিল আমি তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। জোনাকী পোকাটা কোত্থেকে যেন কি মনে করে, হয়তো পথ ভুলে আমার ঘরে ঢুকেছিল। তারপর আমার ঘুম কি করে ভাঙ্গলো আমার মনে পরেনা। হয়তো সেই জোনাকী পোকাটার আলো আমার ঘুম ভাঙিয়ে ছিল। চোখ খুলে সাথে সাথেই মনে হয় ওটার উপস্থিতি টের পাইনি আমি। হয়ত হঠাৎ করে খেয়াল করেছি মশারীর উপর কিছু একটা যেন জ্বলছে। প্রথম অনুভূতিটা ছিল ভয়ের। মনে হয়েছিল একটা জ্বলন্ত শয়তান বুঝি ঢুকেছে আমার ঘরে। কিছুক্ষন পরে মনে হয়েছিল ওটা হয়তো একটা জোনাকী পোকা। সেই জোনাকী পোকাটা ছিল অনেকদিন বিরতির পর দেখা একটা জোনাকী পোকা। প্রবল বিস্মিত হয়েছিলাম। ঘটনাটা যদি গ্রামের বাড়িতে ঘটত, যদি গ্রামের টিনের চালার একটা ঘরে ঘুম ভেঙে চোখ মেলে জোনাকী পোকাটাকে দেখতে পেতাম,তাহলে হয়ত খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হত। কিন্তু ইট কাঠের দালানের ভেতর এই ঢাকা শহরে ঘরের ভেতর ঘুমঘোরে জোনাকী পোকা দেখতে পাওয়া খুবই অবাস্তব একটা ঘটনা। তাই আলোটাকে জোনাকী পোকা ভেবেই খুব স্বস্তিতে ছিলামনা, বরং চেতন এবং অবচেতন মনে ভয়ের রেশটাই প্রবল ছিল। আলোটাকে অতিপ্রাকৃত কিছু ভাবতে মনের একটা অংশ সায় দিচ্ছিল। আর কোণঠাসা যুক্তিবাদী অংশটা ক্ষীণসুরে বলছিল ওটা একটা নিরীহ জোনাকী পোকাই হবে। জোনাকী পোকাটা (যদি সেটা জোনাকী পোকাই হয়ে থাকে) একটু পর মশারীর উপর থেকে উড়ে চলে গিয়েছিল। তবে সেটা ঘরের ভেতরেই ছিল, অন্তত আমি ঘুমিয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত। এরপর মনে মনেও সে দ্বন্দের আর সমাধান মেলেনি, হয়ত সমাধান চাইনি বলেই।