রেডিও গুনগুন চলছিল। এখন প্রায় সময়ই কোন না কোন রেডিও ছেড়ে রাখি। হঠাৎ আইয়ুব বাচ্চুর এই গানটা ছাড়লো। আমার খুব প্রিয় একটা গান। গানটা অনেক কথা মনে করিয়ে দিল। মনে পরে গেল প্রথমবার গানটা শোনার সময়কার কথা। প্রথমবার গানটা শুনেছিলাম এক বড় ভাইয়ের মুখে। ক্লাস নাইনে পড়ি তখন। আমাদের কলেজে তখন (এখনও হয়তো) প্রতি বছর প্রত্যেকটা আবাসিক হলের হাউস ফাংশান আয়োজন করতে হতো। বিশাল উৎসবের ব্যাপার ছিল সেটা। মাসব্যাপী পরিকল্পনা চলতো। প্রতিটা হাউস চেষ্টা করতো গুনে মানে অন্য সব হাউসকে ছাড়িয়ে যেতে। খুব উপভোগ্য ছিল সেই প্রতিযোগিতা। সেই অনুষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে আবার হাউসগুলোর র্যাংক করা হতো। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন আমি ছিলাম নজরুল ইসলাম হাউসের ছাত্র। আমাদের হাউস মাস্টার তখন ছিলেন আমিনুল ইসলাম স্যার। হাউস ফাংশানের উপস্থাপক হিসেবে কেন যেন তিনি আমাকে পছন্দ করেছিলেন। আমার সাথে অবশ্য একজন দ্বাদশ শ্রেণীর ভাইয়াও ছিলেন উপস্থাপক হিসেবে।সেই অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতে গিয়ে পুরো অনুষ্ঠানের সাথেই জড়িয়ে গিয়েছিলাম। আমি অনাবাসিক ছিলাম। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমি বেশ কয়েকদিন হাউসে কাটিয়েছিলাম। অনুষ্ঠানের প্রতিটি খুটিনাটি মুখস্ত হয়েগিয়েছিল মহড়া দিতে দিতে। অনেক মজা হতো। প্রথম প্রথম বেশ নার্ভাস লাগতো। তারপর আস্তে আস্তে ভরসা পেলাম, মনে হতে লাগ্লো উৎরে যাব। সেই অনুষ্ঠানের মহড়া করতে গিয়ে প্রথম এই গানটা শুনি অলিন ভাইএর মুখে। প্রথমবার শুনেই মুগ্ধ হয়েছিলাম। অলিন ভাইএর গানের গলা খুব ভাল ছিল। সেজন্যই বোধহয় উনি গানটার ব্যাপারে বেশ কনফিডেন্ট ছিলেন। মহড়াতে মনে হয় কেবল একবারই তাকে গাইতে শুনেছি আমি। মূল অনুষ্ঠানে গানটা শোনার জন্য তাই মনে মনে অপেক্ষা করছিলাম। তখন মাত্র নাইনে পড়ি। দ্বাদশ শ্রেণীর ভাইদের কি যে বড় মনে হতো। এখন ভাব্লে হাসি পায়। তখন তদের দেখে মনে হতো কতো কিছু তারা পারে, কত দ্বায়িত্ব তারা কতো সহজ ভাবে নেয়! আমার সাথে যেই ভাইয়াটা উপস্থাপনা করেছিলেন তার নামটা ভুলে গেছি। অলিন ভাইকে মনে থাকার কারণ আছে। কলেজের অন্যতম স্মার্ট ভাইয়া ছিলেন তিনি। আর মূল অনুষ্ঠানের দিন একটা ঘটনা তাকে আরও ভুলতে দেয়নি। আমার তখনও কোন ব্লেজার ছিল না। সাধারণতো কলেজের ছাত্ররাই ব্লেজার বানাতো তখন। আমি অনুষ্ঠানের দিন গিয়ে দেখি আমার সহ উপস্থাপক ব্লেজার পরে আছেন। তাকে দেখে আমার নিজেকে বেমানান মনে হতে লাগ্লো। হীন্মন্যতায় ভোগা শুরু হল। একটা সময় গিয়ে মনও বেশ খারাপ হয়ে গেল। আশা করছিলাম উপস্থাপনার সময়টা হয়তো কোন বড়ভাই তার ব্লেজার খুলে আমাকে দিবেন। কিন্তু কাউকে দেখছিলাম না নিজে থেকে কিছু বলতে। এই সময় অলিন ভাই নিজেই এসে আমাকে তার ব্লেজারটা দিয়েছিলেন।সাইজে আমার একটু বড় হয়েছিল। কিন্তু তাতে কি, ব্লেজার পরে আছি এই সুখে মহা আনন্দে উপস্থাপনা করেছিলাম। আমাদের পুরো অনুষ্ঠান একদম পরিকল্পনামাফিক হয়েছিল। এবং আমরা সেবার চ্যাম্পিয়ান হাউস হয়েছিলাম। কি যে আনন্দ আর গর্ব হয়েছিল সেদিন!
Saturday, October 09, 2010
Sunday, March 07, 2010
ভোরের ঘ্রাণ
জানালায় দাঁড়িয়ে আছি। ঠাণ্ডা একটা আরামদায়ক বাতাস হচ্ছে। শরীর জুড়ানো বাতাস। কান পাতলে বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। পুরো ঢাকা শহর ঘুমিয়ে পড়েছে। দূরে জাপান গার্ডেন সিটির বিল্ডিং এর ঘুমন্ত সারি। রাত বাজে তিনটা। বাতাসটা ভালো লাগছে খুব গায়ে মুখে মাখতে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছি। অনেকদিন ভোরে উঠিনা। এই বাতাসটা আমাকে ভোরের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। বাতাসে একটা ভোর ভোর ঘ্রাণ পাচ্ছি। মনে হচ্ছে কি আর একটু পরেই ভোর হয়ে যাবে। ভোরের কথা মনে হতেই অনেক আগের কিছু ভোরবেলার স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। একসময় আব্বা খুব সকালে হাঁটতে বের হতেন। সংসদ ভবন পুরোটা চক্কর দিয়ে ফিরতেন। স্কুল ছুটি থাকলে কোন কোন ভোরবেলা আমি, আমার ভাই-বোনও সঙ্গী হতাম। আব্বার সাথে তখন পাল্লা দিয়ে হাঁটতে পারতাম না। শুধু পেছনে পড়ে যেতাম। তাই একটু পরপর দৌড়ে নিতে হতো। কত রকম মানুষ দেখতাম। পত্রিকার হকারদের দেখতাম সাইকেল চেপে ছুটতে। মাঠা বলে এক অদ্ভুত বস্তু বিক্রি করতো কিছু মানুষ। কিছু মানুষ কত অদ্ভুত রকম ব্যায়াম করতো আপন খেয়ালে। কোন কোন জায়গায় দেখতাম দলবেঁধে ব্যায়াম করার দৃশ্য। একজন সামনে থেকে নির্দেশনা দিত আর পেছনে লোকজন তাকে অনুকরণ করতো। সংসদ ভবনের খুব কাছেই থাকতাম তখন আমরা। বাসা থেকে বেরিয়ে আধ মাইল হাঁটলেই ঢুকে পড়তাম সংসদ ভবন এলাকায়। সেখানে মূল রাস্তাটা ধরে হাঁটতাম। কখনও বামে ঢুকে জিয়ার কবরের ওদিক দিয়েও ঘুরে আসতাম। এরপর যুদ্ধ বিমানটা যেখানে রাখা সেখানে গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে হাঁটতাম। তারপর আরেকটা ডানে বাঁক নিয়ে লাল ইটের একটা টানেলের মত জায়গায় বলে যেতাম। সেখানে থেকে সামনে হেঁটে যেতে থাকলে একসময় চলে আসতো আসাদ গেইট। ওখানে ভোর বেলাতে পত্রিকার পাহাড় জমতো। হকাররা জড়ো হতো একসাথে। টাটকা ছাপা হওয়া পত্রিকা একসাথে দেখতে যে কী ভীষণ ভালো লাগতো। আসাদ গেইটের মোড়ে একটা পত্রিকার স্ট্যান্ডে সেবা প্রকাশনীর বই রাখতো। আব্বার কাছে প্রায় দিনই আবদার করতাম একটা গোয়েন্দা রাজু বা তিন গোয়েন্দার জন্য। কখনও কখনও আবদার রাখা হতো। বইগুলোকে গায়ের সাথে লেপ্টে বাসায় ফিরতাম। সেদিন সেদিন আর পা ব্যথা বলে রিকশা করে ফেরার বায়না ধরতাম না। বইগুলো পড়বো বাসায় ফিরে এই ভাবতে ভাবতে পথ কেটে যেত।
কয়েকটা কুকুর ডাকছে কাছে কোথাও। কুকুরের ডাকটা শুনেও কেন জানি মনে হচ্ছে ভোরের কথা। একটু পরেই হয়তো ঘুমাতে যাব। ভোরে হতো ঘুম ভাঙবে না আর। ভোরের জন্য তাহলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে...
কয়েকটা কুকুর ডাকছে কাছে কোথাও। কুকুরের ডাকটা শুনেও কেন জানি মনে হচ্ছে ভোরের কথা। একটু পরেই হয়তো ঘুমাতে যাব। ভোরে হতো ঘুম ভাঙবে না আর। ভোরের জন্য তাহলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে...
Saturday, February 20, 2010
কথা ব্লগ
ইচ্ছে হল একটা কথা ব্লগ লিখব। নতুন কিছু মাথায় এলোনা। স্টাডিট্যুর নিয়ে লেখাটাকেই তাই পড়ে ফেললাম। একদম ইচ্ছে হল তাই।
Powered by eSnips.com |
Saturday, January 16, 2010
ভালবাসা তারপর
কষ্টগুলো শিকড় ছড়িয়ে
ওই ভয়ানক একা চাঁদটার সাথে
স্বপ্নের আলোতে যাবো বলে
যখন চোখ ভিজে যায় রাতে।
ভালবাসা তারপর দিতে পারে
গত বর্ষার সুবাস
বহুদিন আগে তারাদের আলো
শূন্য আধাঁর আকাশ।
প্রখর রোদে পোড়া পিঠ
আগুনের কুণ্ডে সেকাঁ হাত
শিশির ছোয়াঁয় পাবে হাসি
অন্ধকারে কেটে যাবে রাত।
ওই ভয়ানক একা চাঁদটার সাথে
স্বপ্নের আলোতে যাবো বলে
যখন চোখ ভিজে যায় রাতে।
ভালবাসা তারপর দিতে পারে
গত বর্ষার সুবাস
বহুদিন আগে তারাদের আলো
শূন্য আধাঁর আকাশ।
প্রখর রোদে পোড়া পিঠ
আগুনের কুণ্ডে সেকাঁ হাত
শিশির ছোয়াঁয় পাবে হাসি
অন্ধকারে কেটে যাবে রাত।
Subscribe to:
Posts (Atom)